কথিত জ্বিনের বাদশা রাউজানের হাকিম চৌধুরী গ্রেফতার

শফিউল আলম,রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ রোগমুক্তির কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া কথিত জ্বিনের বাদশা হাকিম চৌধুরীকে (৪৫) অবশেষে চট্টগ্রামের রাউজান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ প্রতারক চক্রের আরো তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত হাকিম চৌধুরী, জসিমউদ্দিন ও আবদুর রহমান আমান মাদারীপুর জেলহাজতে রয়েছে।মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্ল্যা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে কথিত জ্বিনের বাদশা চক্রের এই সদস্যরা নানা রোগ সারানোর কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।গত ে রবিবার মাদারীপুর জেলা পুলিশ চট্টগ্রামের রাউজান এলাকা থেকে কথিত জ্বিনের বাদশা হাকিম চৌধুরীকে গ্রেফতার করে।প্রতারক হাকিম চৌধুরী রাউজানের পাঁচখাইন এলাকার আলী মদন চৌধুরীর ছেলে।চক্রের প্রধান হোতা হাকিম চৌধুরীকে মঙ্গলবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ এর কাছে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। সে জবানবন্দিতে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।জবানবন্দির পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা আরও জানান, ভারতীয় জি-বাংলা ও দেশের কয়েকটি টেলিভিশনে (চ্যানেল) জ্বিনের বাদশা সব রোগ সারাতে পারে এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে একটি প্রতারক চক্র। নানা ধরনের রোগের মুক্তির কথা বলে এই প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হারিয়ে নিচ্ছে।হাতিয়ে নেওয়া সব মিলে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা ও এফডিআরসহ ৬৮ লাখ টাকা ইতিমধ্যে জব্দ করা হয়েছে।প্রতারক চক্র দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় তিনশতাধিকের বেশি মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাদী মো. খসরুামান জানান, চেহারা পরিবর্তন করে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেয়া হাকিম চৌধুরীকে সহজেই কেউ চিনতে পারতো না। ২৬ আগস্ট এই প্রতারক চক্রের হোতা জসিমউদ্দিন ও আব্দুর রহমান আমানকে রাউজান থেকে গ্রেফতার করা হয়।তিনি আরও জানান, মাদারীপুরের এক গৃহবধূ এই প্রতারক চক্রের কাছে ৫৮ লাখ খুইয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় ৯ আগস্ট একটি মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে ২৬ আগস্ট প্রথম ধাপে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে জসিমউদ্দিন ও আব্দুর রহমান আমানকে গ্রেফতার ও তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।টানা ৪ দিন অভিযান চালিয়ে রবিবার চক্রের মূল হোতা হাকিম চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে সোমবার তাকে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার চিফজুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদের কাছে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।