কাপ্তাই শিল্প এলাকায় বন্যহাতির তান্ডব, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে ইউএনও

নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই কাপ্তাই শিল্প এলাকা ও সুইডিশ মার্কেটে বন্যহাতির তান্ডবে ২টি দোকান ও ৬টি বসতভিটার ক্ষতি সাধিত হয়েছে সোমবার দিবাগত রাত প্রায় ৩টাট সময়। বন্যহাতির তান্ডবে প্রতিনিয়ত এলাকার লোকজনের মধ্যে ভয়ংকর আতংক বিরাজ করছে। অনেক পরিবারের শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও গভীর রাতে বন্য হাতি আতংকে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলেন। শিল্প এলাকায় বসবাসরত লোকজন অভিযোগ করেন, দীর্ঘ একমাস যাবৎ একটি বন্য হাতি পার্শ্ববর্তী বন হতে শিল্পএলাকা, সুইডিশ মার্কেট, কেপিএম চিপার হাউজসহ বিভিন্ন এলাকায় তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। উক্ত হাতিটি লোকালয়ে এসে লোকজনের বসতভিটার কলাগাছ, নারিকেলগাছ ধ্বংস করে বসতভিটা এবং সুইডিশ মার্কেটের জাকির হোসন ও জয়নালের দোকান ভেঙ্গে ফেলে। এতে তাদের পঞ্চাশ হাজার টাকার মালামাল ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় মসজিদের ইমাম আনোয়ার হোসেন ও মুয়াজ্জিন ইসমাইল, ফজরের নামাজ পড়তে এসে হাতির আক্রমনে আহত হয়েছে এবং অনেক সময় হাতির আক্রমনে খুব বিপদজনক সমস্যার ও সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। উক্ত এলাকায় হাতির আক্রমণে ভুক্তভোগী আবু ইউসুফ, মিন্টু মিয়া, ফারুক, হালিম, আব্দুল মালেক, ইকবাল ও কবির আহমদ জানান, দীর্ঘ একমাস যাবৎ ওই হাতিটি রাতে কিংবা ভোররাতে এসে তাদের বসতভিটার গাছপালা ভেঙ্গে সাবাড় করে দিচ্ছে। সর্বশেষ বাসাবাড়িতে এসে হামলা করছে। তারা আরো বলেন, এখন নিজেদের ঘরে থাকাটাও বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার(২৫ আগস্ট) শিল্প এলাকার বাসিন্দা ফারুক জানান, সোমবার রাত ৩টায় হাতিটি তার বাসায় হামলা করে নারিকেল গাছ চালের ওপর ফেলে দেয় এবং বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রাতে তার স্ত্রী ও কন্যা হাতি আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, ভয়ঙ্কর হাতির তাণ্ডবে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। উক্ত এলাকার সচেতন নাগরিক আকতার আলম, আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতিনিয়ত তারা বিভিন্ন প্রকার,বাঁশি বাজিয়ে, আগুন জালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। উক্ত হাতিটির কারণে যে কোন সময় বড়ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার পূর্বে প্রশাসন তথা বনবিভাগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা জরুরী হয়ে পড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে, মঙ্গলবার কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান বন্যহাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে তিনি জানান, বন্যহাতির তান্ডবরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এবং সে সাথে পরবর্তীতে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়া ব্যাক্তিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। এবিষয়ে কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহাবুব উল আলম বলেন, বনের মধ্যে খাবার না থাকার কারনে হাতিরা লোকালয়ে এসে তান্ডব করছে। কাপ্তাই বনবিভাগ প্রশাসনিক ভাবে একটা ব্যবস্থা নিবে বলে তিনি জানান। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহাবুব উল আলম, সিএমসি সভাপতি কাজী মাকসুদুর রহমান বাবুল, বিএফআইডিসির মাঠ পরিদর্শক আমান উল্ললা, ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তার,আব্দুল আহাদ সেলিমসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।