সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে সয়লাব
কাপ্তাই ১০ শয্যা হাসপাতাল নিজেই অসুস্থ

নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই।
কাপ্তাই উপজেলাধীন লগ গেইট এলাকাস্থ কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের পার্শ্ববতী টিলায় অবস্থিত ‘কাপ্তাই ১০ শয্যা হাসপাতাল’। দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় থেকে হাসপাতালটি নিজেই আজ অসুস্থ পড়েছে। তাই রোগীর চিকিৎসার পূর্বে হাসপাতালটির চিকিৎসা করা জরুরি বলে স্থানীয়রা মন্তব্য করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই ইউনিয়ন এলাকার প্রায় ১২-১৩ হাজার লোকের বসবাস। এই বিপুল জনগোষ্ঠীসহ পার্শ্ববর্তী বিলাইছড়ি উপজেলা হতেও এখানে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসে।
সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রতিটি কক্ষ, ডাক্তার, রোগী,কর্মচারী বা তাদের থাকার আবাসস্থল গুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতে হাসপাতালের প্রতিটি কক্ষে পানি পড়ে সয়লাব হয়ে যায়। সেবা নিতে আসা রোগী এবং ডাক্তারদের এমন পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে রোগীদের দাঁড়িয়ে থেকে সেবা নেওয়ার মতো কোন পরিবেশ থাকেনা।
তাছাড়া ডাক্তার নার্স, কর্মচারীদেরও একই হাল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা আমেনা, বাবুল, হাকিম বলেন, তারা বৃষ্টির জন্য হাসপাতালে দাঁড়াতে পারে না। বর্তমানে হাসপাতালের যে অবস্থা তাতে জরুরী ভাবে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ এটি মেরামত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে তারা মন্তব্য করেন।
এলাকার সচেতন কয়েক ব্যক্তি বলেন, ইতিপূর্বে টেন্ডার নিয়ে হাসপাতালটিতে জোড়াতালি দিয়ে কাজ করা হয়েছে। কাজের মান নিম্ন মানের হওয়ায় বৃষ্টি পড়ার সাঘে সাথেই হাসপাতাল পানিতে সয়লাব হয়ে যায়।
কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আওতাধীন হাসপাতালটি দীর্ঘ প্রায় বিশ বছর যাবৎ নামেই ১০ শয্যা হাসপাতাল। ইউনিয়নের ১২-১৩ হাজার মানুষ এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল হলেও কাজের কোন কিছুই নেই।
এখানে রয়েছে ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী সংকট। ডাক্তারদের থাকার নিয়ম থাকলেও কোন ডাক্তার এখানে থাকেনা। সপ্তাহে একজন ডাক্তার ২-৩ বার কয়েক ঘণ্টার জন্য অবস্থান করে আবার চলে যায়। এলাকায় কোন রোগী যদি হঠ্যাৎ মারাও যায়, তবে মৃত সনদ দেওয়ার মত কোন ডাক্তার পাওয়া যায়না। স্থানীয় ফার্মেসী গুলোতে প্রেক্টিস করা পল্লী চিকিৎকের উপরই নির্ভর করতে হয় রোগীদের।সূত্র মতে, হাসপাতালের জরাজীর্ণ অবস্থা নিয়ে একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও দীর্ঘ দিন যাবৎ তা সংস্কার করা হচ্ছেনা।
এদিকে, কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদ আহমেদ চৌধুরী ১০ শয্যা হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, এ হাসপাতালের সমস্যা ও সংস্কার নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন পূর্বে রাঙামাটি সির্ভিল সার্জন এসে হাসপাতালটি পরির্দশন করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে ডাক্তার এসেও অবস্থান করতে পারেনা। স্বাস্থ্য বিভাগ বা উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হলে হাসপাতালটি তার হারানো চিরচেনা রুপ ফিরে পাবে।