হাটহাজারীর অধিবাসী চবি শিক্ষকদের উদ্যোগে হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম

আলী আরশাদ চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক, চবি।

শিক্ষকদের উদ্যোগ কখনো বৃথা যায় না, এটা আরো একবার প্রমাণিত হলো হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপোর্ট সিস্টেম ইনস্টলেশন এর মাধ্যমে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই সিস্টেম চালুর উদ্যোগ বিভিন্ন দিক থেকে আসলেও এমপি মহোদয় খরচ বিবেচনায় সেটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নি। এ উদ্যোগগুলোর মধ্যে হাটহাজারীর সন্তান ইন্জিনিয়ার মিথুন রাহা তাদের ‘প্রযত্নে ক্যানভাস’ নামক একটি সংগঠনের সহায়তায় স্বল্পখরচে তা স্থাপনের আগ্রহ দেখায়। কথা বলেন তার ব্যাচম্যাট চবি’র কয়েকজন শিক্ষকের সাথে। খরচের পরিমাণ জানার পর আমার সেসমস্ত শিক্ষক সহকর্মীদের মনে হলো এখরচ আমরা নিজেরাই দিয়ে দিতে পারি। শুরু হলো শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে হাটহাজারীর প্রায় ৬৩ জন শিক্ষকের সমন্বয়ে গঠিত হলো CU FACULTIES HATHAZARI.
প্রকল্প হাতে নেয়া হলো ‘নিঃশ্বাসে হাটহাজারী, ২০২০’। আহবায়ক করা হলো চবি’র সাবেক রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. কামরুল হুদা স্যারকে। জুম মিটিং করা হলো। সিনিয়র জুনিয়র সবার অভুতপূর্ব সাড়া। দায়িত্ব দেয়া হলো আহবায়ক স্যারকে এম পি সাহেবের সাথে কথা বলার জন্য। পরের দিন স্যার জানালেন, এমপি সাহেব বলেছেন শিক্ষকরা উদ্যোগ নিলে তিনি রাজী আছেন এবং প্রাথমিক সিস্টেম স্থাপনের পুরো খরচ তিনি যোগাড় করবেন। সিলিন্ডার সংগ্রহের কাজটা আমাদের করতে হবে।
এরপর আবার সিলিন্ডার নিয়ে যোগাযোগ শুরু। আমাদের সাথে জুম মিটিং এ যোগ দিয়েছিলেন ইন্জিনিয়ার মিথুন রাহা এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডাঃ ইমতিয়াজ সাহেবও। যাক, আবুল খায়ের গ্রুপের ডিএমডি আবু সাইদ চৌধুরী বাবলু ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলেন আহবায়ক স্যার। দুদিনের মধ্যেই সিলিন্ডার চলে এসেছে। তবে সে সিলিন্ডার গুলো সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপোর্ট সিস্টেম এর সাথে যায় না। তবে ডাঃ সাহেব জানালেন তা এখন ব্যবহার হচ্ছে। তারপর বড় সিলিন্ডার সংগ্রহের জন্য চেষ্টা চলছিল। এরমধ্যে সবচেয়ে কমমূল্যে ডাঃ সাহেব সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করলেন এবং আমাদের জানালেন ব্যয়ভারটা আমাদেরই বহন করতে হবে।
মাত্র তিনদিনের মধ্যেই হাটহাজারী চবি শিক্ষকগণ তাদের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সেই টাকা জমা করেন আমাদের একটি যৌথ হিসাবে। আমরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ডাঃ সাহেবকে একটা চেক দিয়ে আসলাম তাদের চাহিদা অনুযায়ী।
ইতিমধ্যে ডাঃ সাহেব এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও এম পি সাহেবের পরামর্শে কিছু অনুদান সংগ্রহ করলেন। সকলের যৌথ প্রচেষ্টা ছাড়া কোন কাজ সফল হয় না। তবে শিক্ষকরা সেদিন মিথুন রাহার ডাকে সাড়া না দিলে এটি হতো কিনা সন্দেহ আছে আমার।
আমরা প্রচারের জটিলতায় গিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাধা হতে চাইনি। আমরা হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ডাঃ সাহেবের পরামর্শে সেটি করিনি।
আগামীকাল সকাল ১০ টায় হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপোর্ট সিস্টেম ইনস্টলেশন এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।

আত্নতৃপ্তিতে ভোগে এ পোস্ট নয় বরং সামনের দিনগুলোতে হাটহাজারীর কল্যাণে হাটহাজারীর চবি শিক্ষকদের উদ্যোগ অব্যাহত থাকার ও সকলের সহযোগিতার জন্যই এ পোস্ট।
বি.দ্র. হাটহাজারীর মাননীয় এম পি ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এর একান্ত চেষ্টায় এ উদ্যোগ সফলতার মুখ দেখেছে। শিক্ষকদের উপর আস্থা রাখায় এম পি মহোদয়কে অশেষ ধন্যবাদ। অশেষ ধন্যবাদ ডাঃ ইমতিয়াজ, ও ইন্জিনিয়ার মিথুন রাহাকে।