লটকন চাষ করুন, স্বাবলম্বী হোন

আরমানউজ্জামান
লটকন নামের ফলটির কেজি প্রতি দাম সর্বনিম্ন ৮০/- টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২০/- টাকা। গ্রামের বাড়িতে এরকম ৫টা গাছ থাকলে যে কোনো পরিবারের লটকনের সিজনে ২/৩ মাসের খরচ অনায়াসে চলে যায়। কারণ বাসা ভাড়া দিতে হয় না। শহরের মতো ভোর হতেই ব্যক্তি প্রতি খরচ শুরু হয় না। এবার বলি পেঁপে এবং কলার কথা। এগুলো সারা বছরের ফল। কাঁচা পেপের কেজি ৬০/- টাকা, কলা ডজন কমপক্ষে ৬০/- উপরে ১৫০/-টাকা।

উদাহরণ মাত্র তিনটা জিনিসের কথা বললাম। কৃষি অর্থনীতি গড়ে তোলার এতো এতো সুযোগ রয়েছে আমাদের কিন্তু আমরা নিরুপায়, হতাশ। অথচ হাঁস, মাছ, মুরগী, গরুসহ নানান খামার করার সুযোগ রয়েছে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে। ব্যাপকভাবে করা না গেলেও নিজেদের খেয়ে পড়ে চলে যাবার মতো অবস্থা অনেকের আছে। কেননা ১ ডজন ডিমের দাম কমপক্ষে ১০০/- টাকা। অন্তত নিজের আঙিনায় চাষ করলেও তরকারি কিনে খেতে হয় না।

অথচ আমরা বহু মানুষ শহরে মানবেতর জীবনযাপন করি। লেখাপড়া শিখলেই কর্পোরেট গোলামি করতে হবে এই ধারণা আমাদের রক্তে মিশে গেছে। দিন শেষে দুহাত ভরে উপর্জন করেলেও শহুরে ইট পাথরের দেয়ালে মানবতা নেই। আছে বিলাসিতার মাঝে হাহাকার। উদ্যোক্তা হতে শুধুই বড়বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে হবে এ ধারণা ভুল সেটা একটা খামারের মালিক হলেও সম্ভব। আমাদের একটা মিথ্যা আত্মসম্মানবোধ গ্রাস করে রেখেছে তাহলো এসব কাজ করা যাবে না। অথচ বিদেশে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের কতো ধরণের কাজ করতে হয় হিসাব নেই।

আবার অনেকে ভাবছি গ্রামে লেখা পড়া নেই, সন্তান মানুষ হবে না! অথচ পাবলিক ভার্সিটি, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষাসহ স্বপ্নের বিসিএস ক্যাডার হবার প্রতিযোগিতায়ও মফস্বল শহর এমন কি প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেও অনেক ভালো ফলাফল করছে।

শহর মানেই সব নয়। রাজধানী কিংবা বন্দরনগরী কেন্দ্রিক আটকে যাওয়া মানুষের চাকচিক্যময় জীবন আজ ভীষণ হুমকির সম্মুখীন। কর্মহীন হয়ে আজ অনেকেই গ্রামে ফিরে যাচ্ছি একবুক হতাশা নিয়ে। এক করোনা আমাদের জীবনবোধ যা শিখিয়ে গেলো তা ভাবনাতীত ! তবুও আমরা কতোটা শিখে নিতে পারবো এটা ভীষণ সন্দিহান।