মানবতার বার্তা নিয়ে মুক্তি পেল ‘হিল দ্য ওয়ার্ল্ড’

ভাবো পৃথিবীটা একটাই দেশ/ একটা দেহ, একটাই প্রাণ অবশেষ/ ভাবো মানবতাই আমাদের ধর্ম/ ভালোবাসাই আমাদের কর্ম / মিলেমিশে থাকব, হাতে হাত রাখব / রাখব না কোনো বিদ্বেষ। বর্তমান পৃথিবীর সবাই সংশয়ে, কেউ করোনাভাইরাস নিয়ে, কেউ বর্ণবাদ নিয়ে, কেউ মৌলিক অধিকার নিয়ে আবার কেউ প্রকৃতি নিয়ে। আর এসব নিয়েই আমাদের মানবিক মূল্যবোধ। বিষয়টিকে ধারণ করে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের রক্ষার আহবান নিয়ে মুক্তি পেল হিল দ্য ওযার্ল্ড।

গত ১৪ জুন ভারত বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় বাংলাদেশ-ভারতে একসঙ্গে মুক্তিপায় মনবতার এই গান ‘হিল দ্য ওর্য়াল্ড। ভারতের থার্ড আই ফিল্মস মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় থেকে মুক্তির আহবান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের প্রথম নির্মাণ ভারত আমার জন্মভুমি দর্শকদের হৃদয় কেড়েছে।

এরপর একে একে বেকারত্ব সমস্যা নিয়ে শর্টফিল্ম, ধূমপান বিরোধী ফিল্ম এবং সামাজিক অসঙ্গতি নিয়ে ফিল্ম নির্মাণ করে চলেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। যা ভারত, বাংলাদেশ, মধ্যপ্রাচ্যসহ সমগ্র বিশ্বে বসবাসরত বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে।

মানবতা ও মানবিকতার এক অনন্য বাণী নিয়ে কবি আল মাসুমের কথায় থার্ডআই ফিল্মস এবার বাংলাদেশের শিল্পী দিদারুল ইসলামের কণ্ঠে মুক্তি দিল মিউজিক্যাল ফিল্ম ‘হিল দ্যা ওয়ার্ল্ড’। সঙ্গীত পরিচালনা করেন পারভেজ জুয়েল। আর এতে অভিনয় করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা অভিনেত্রী।

ফিল্মটি নিয়ে ভারতীয় অভিনেতা প্রদীপ দত্ত বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়ার। যদি পৃথিবীটা একটাই দেশ হতো তাহলে ভারত-বাংলাদেশ বলে তো কিছু থাকত না। আমরা সীমাহীনভাবেই মানবতার চর্চা করতে পারতাম। কিন্তু জাতিগত পরিচয় ও রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের সৌন্দর্যবর্ধক না হয়ে আজ চর্চিত হচ্ছে সংকীর্ণতায়। এই সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে মানবতাকে স্থান দেওয়ার লক্ষ্যেই আমরা ভারত ও বাংলাদেশ মিলে পুরো পৃথিবীর জন্য এই বার্তাটি তুলে ধরলাম।

ফিল্মটির পরিচালক এইচ আল বান্না বলেন, সমসাময়িক ভাবনাকে সামনে নিয়ে আসাই এই মিউজিক্যাল ফিল্মের লক্ষ্য। আশা করি বাংলাদেশ ও ভারতের দর্শকরা ভিন্ন স্বাদ পাবে এই পরিবেশনা থেকে। তিনি বলেন, আমেরিকায় ফ্লয়েড হত্যার পর সমগ্র বিশ্ব এই বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনকে স্বাগত জানাচ্ছে। এবং এটাকে ষাটের দশকের সিভিল রাইট মুভমেন্টের পুনর্জন্ম হিসাবে দেখছে। সেই আন্দোলনে প্রথম সারিতে ছিলেন মার্টিন লুথার কিং রোসাপার্ক্স এবং ম্যালকম এক্স। সেই সময়ে মানুষ যেমন এসব নেতৃত্বের ওপর আশা ভরসা ও স্বপ্ন দেখেছে একটি নিরাপদ পৃথিবীর তেমনি আজকের তরুণদের এই জাগরণও আমাদেরকে স্বপ্ন দেখায়।

গানটির শিল্পী বাংলাদেশের দিদারুল ইসলাম বলেন, এমন একটি কাজে আমি অংশীদার হতে পেরে খুব ভাগ্যবান বোধ করছি। কারণ ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে মানবতার গান গাইতে পারাটা অবশ্যই সৌভাগ্যের। বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা ভাষীদের যৌথ প্রযোজনায় এই ফিল্মটি যদি দর্শকদের বিন্দুমাত্র আনন্দ দিতে পারে পরিবেশকে রক্ষার মানবিকতা জাগ্রত হয়, সেখানেই আমি সার্থক হবো। তিনি বলেন, সৃষ্টির আনন্দ হলো ভেদাভেদহীন সুন্দর একটা পৃথিবীর কল্পনা, সেই কল্পনাটাকে সুরের মুর্ছনায় ছড়িয়ে দেওয়া।