তাপস করোনা মুক্ত হয়েই ঝাঁপিয়ে পড়লেন করোনা যুদ্ধে

নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই
কাপ্তাই উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাবরেটরি) তাপস চন্দ্র বনিক করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হন করোনা ভাইরাসে। আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়ে আবারো রোগীদের নমুনা সংগ্রহের কাজে আত্মনিয়োগ করেন করোনা যুদ্ধের এই ফ্রন্টলাইনর্স। বিভিন্ন গণমাধ্যমে যাকে নিয়ে অনেক লেখালেখিও হয়েছে।
জানা গেছে, অপর দু’সহযোগীকে নিয়ে তাপস করোনা রোগীদের সেম্পল কালেকশন করতেন রাতদিন। পরিবারকে সুরক্ষায় রাখতে বাসা ছেড়ে হাসপাতালে কাটাতেন তিনি। বাসা ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত করোনা তাকে ছাড়েনি। অসুস্থ বোধ করায় গত ২৭ মে’ তার নমুনা পাঠানো হয় চট্টগ্রামে। ২ জুন আসা রিপোর্টে তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। সামান্য উপর্সগ থাকায় চন্দ্রঘোনা দোভাষী বাজার তার বাসায় থেকে তিনি হোম আইসোলেশনে চলে যান। শুরু হয় জীবনের নতুন যুদ্ধ।
কাপ্তাই স্বাস্থ্য বিভাগের এই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) তাপস চন্দ্র বনিক এই প্রতিবেদককে জানান,২ জুন করোনা পজেটিভ আসার পর তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পরামর্শে বাসায় নিজেকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা নিতে থাকেন। তবে তার হালকা জ্বর ছিল, অন্য কোন লক্ষন ছিলো না। তিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রেখে ডাক্তারের পরামর্শে প্রতিদিন ৪ বার গরম পানির ভাপ নিয়েছেন, লবন পানি দিয়ে গড়গড় করেছেন এবং নাপা, ডক্সিসাইক্লিন, ভিটামিন- ই ও ভিটামিন- সি খেয়েছেন। কখনো মনোবল হারাননি। গত ৮ জুন তিনি ২য় সেম্পল দেন এবং ১৩ জুন ২য় সেম্পল নেগেটিভ আসে। এরপর গত ১৪ জুন তিনি ৩য় সেম্পল দেন যা ১৭ জুন নেগেটিভ আসে এবং জেলা সিভিল সার্জন অফিস তাকে সুস্থ ঘোষনা করেন। সুস্থ হবার পর তিনি গত ১৮ জুন আবারো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজে যোগদান করেন।
তাপস চন্দ্র বনিক জানান, ইতিপূর্বে তিনি ৫০ টির মতো নমুনা সংগ্রহ করেছেন। নিজেকে তিনি করোনা যুদ্ধে উৎসর্গ করে দিয়েছেন, কারন এই মূহুর্তে তার এটাই একমাত্র কর্তব্য।
কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদ আহমেদ চৌধুরী তার প্রশংসা করে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) কাজ করেন। তারমধ্যে তাপস চন্দ্র বনিকের পোস্টিং হয় কাপ্তাই লগগেইট ১০ শয্যা হাসপাতালে। করোনা রোগীর প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় তাপসকে উপজেলা সদর হাসপাতালে এনে কাজ করানো হচ্ছে। তিনি নিষ্ঠার সাথে তার দায়িত্ব পালন করে আসছেন।করোনা যুদ্ধের এই ফ্রন্টলাইনর্সকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন।