মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বেতন যাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ডিসেম্বরে প্রথমবার বেতন পরিশোধ এক হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়। এরপর থেকে এই অংক শুধু বাড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব প্রকাশ করেছে। এতে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে বেতন প্রদানের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে।

মার্চ বা এপ্রিল মাসের হিসাব এখনও পুরোপুরি তৈরি না হলেও করোনাকালে এর পরিমাণ আরও বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মে থেকে এমএফএসের মাধ্যমে বেতন পরিশোধের অংক আরও অনেক বাড়বে। এমনকি তা দুই বা আড়াই হাজার কোটি টাকা পেরিয়ে যাবে।

এপ্রিলের আগে পর্যন্ত দেশে এমএফএসের মাধ্যমে বেতন হতো এমন অ্যাকাউন্ট ছিল মাত্র ১৬ লাখ। এপ্রিলের গত দুই সপ্তাহে এ সংখ্যা আরও প্রায় ৩০ লাখ বেড়েছে।

সরকার ঘোষিত প্রণোদনা থেকে ঋণ নিয়ে রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতন এবং অন্যান্য ভাতা এমএফএস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেওয়ার বাধ্যবাধকতার কারণে বাড়তে শুরু করে নতুন অ্যাকাউন্ট।

৬ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত দুই সপ্তাহে বিকাশ, নগদ ও রকেটে মোট ৩০ লাখ নতুন অ্যাকাউন্ট হয়েছে যেখানে মে মাস থেকে এপ্রিলের বেতন ঢুকবে।

এমএফএস অ্যাকাউন্টে বেতন প্রদানের অংকের হিসাবে নেতৃত্বের জায়গায় আছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের প্ল্যাটফর্ম রকেট।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন শনিবার এক সেমিনারে এ বিষয়ে বলেন, ইতিমধ্যে মোট অ্যাকাউন্ট ৪৬ লাখ পেরিয়ে গেছে। তাই মে মাস থেকে এ খাতে লেনদেনের অংক আরও অনেক বাড়বে।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমএফএস প্ল্যাটফর্ম রকেটে গত কয়েক দিনে প্রায় ১০ লাখ নতুন অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে। সামগ্রিকভাবে তারা এমএফএসে দ্বিতীয় বা তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও বেতন আদান-প্রদানে আছেন প্রথম কাতারে।

আগের ১৬ লাখ বেতন অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি ছিল তাদের। চার লাখ ছিল বিকাশের।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডি বলেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে আরও কয়েক লাখ নতুন স্যালারি অ্যাকাউন্ট তাদের নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে বলে আশা তাদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের নির্দেশনার পর প্রথম আশংকা করা হয়েছিল অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বাড়ানো চ্যালেঞ্জ হবে। তবে এমএফএস প্ল্যাটফর্মগুলো অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়টি এখন ইলেক্ট্রনিক্যালি করছে বলে কাজটা তাদের জন্য মোটেও কঠিন হওয়ার কথা নয়।

প্রথমে ২১ এপ্রিলের মধ্যে বেতন অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল। পরে সেটি বাড়িয়ে ২৬ এপ্রিল করা হয়েছে।

জানা গেছে, নতুন খোলা ৩০ লাখ অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১৪ লাখ এসেছে বিকাশে। রকেটে এসেছে প্রায় ১০ লাখ অ্যাকাউন্ট। এর বাইরে ডাক বিভাগের এমএফএস সেবা নগদ পেয়েছে ছয় লাখের মতো অ্যাকাউন্ট।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুসারে ফেব্রুয়ারি মাসে এক হাজার ৮৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার বেতন হিসেবে গিয়েছে বিভিন্ন এমএফএস অ্যাকাউন্টে। এর আগের মাসে যা ছিল এক হাজার ৮৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা।