ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি

টানা ৯ দিনের বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানে বন্যা পরিসি’তি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত শুক্রবার কিছুটা উন্নতি হলেও শনিবার দুপুর থেকে চরম অবনতি হয়েছে। নতুন করে তলিয়ে গেছে শতাধিক গ্রাম। শহরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, পুলিশ লাইন, যুব উন্নয়ন, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং শৈল শোভা, নোয়া পাড়া, মুসলি পাড়াসহ শতাধিক গ্রাম তলিয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। টানা ৫ দিন বৃষ্টিতে মূল শহরের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও উজানের পানি নামায় অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে পানি। আশঙ্কা করা হচ্ছে ’৯৭ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে এবারের বন্যা। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। আবাদি জমি ফসলি ক্ষেত শাক-সবজির বাগান সবকিছু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম ও চড়া হয়ে গেছে। পরিসি’তির উন্নতি না হলে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের।

এদিকে নতুন করে বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হচ্ছে না মানুষের। তলিয়ে যাওয়া বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন পাহাড়ের ঢালে। আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সবমিলিয়ে শহরে এখন জরুরি অবস’া ঘোষণার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

জনস্বাস’্য বিভাগের পক্ষ থেকে ১০০টি জারিকেন ও ৫০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান জনস্বাস’্য নির্বাহী প্রকৌশলী। বন্যার্তদের স্বাস’্যসেবা দিতে ৪১টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত এলাকার জন্য ইতোমধ্যে ৪৫০ মে. টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ অফিস ডুবে যাওয়ায় শহরে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া জেলার লামা, রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি ও আলীকদমে একই অবস’া বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

বান্দরবান সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নোমান হোসেন জানান, হঠাৎ করে বন্যা পরিসি’তির অবনতি হয়ে পড়েছে। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা আরো বাড়িয়েছি এবং আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গতদের শুকনা খাবার ও খিচুড়ি বিতরণের ব্যবস’া করা হয়েছে। দুর্যোগকালীন পরিসি’তি মোকাবেলায় প্রশাসন সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।