কিটকট ছাতা চেয়ারের বিজ্ঞাপনে কোটি টাকার বাণিজ্য!

কক্সবাজার সৈকতে কিটকট ছাতা চেয়ারের বিজ্ঞাপনে কোটি টাকার বাণিজ্য! কক্সবাজার প্রতিনিধি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কিটকটে ছাতায় ও চেয়ারে দেওয়া কোটি টাকার বিজ্ঞাপন হাতিয়ে নিচ্ছে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা। কিটকটের মালিকরা বিনামুল্যে ছাতার কাপড় ও চেয়ারের বেডের কভার পেলেও সরকার এই বিশাল বিজ্ঞাপন খাত থেকে কোন রাজস্ব পাচ্ছে না। টেন্ডার ছাড়াই গোপন চুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে এসব কাজ। বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভায়ও বিষয়টি উত্থাপন হয়নি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে টেন্ডার ছাড়াই গোপন চুক্তির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার বিজ্ঞাপন প্রচারের কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সংস্থা। ওই সংস্থাটি বিভিন্ন কোম্পানীকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছে এসব বিজ্ঞাপন। এতে ওই সংস্থাটি প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা আয় করলেও সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। এই বিজ্ঞাপনের জন্য প্রতিযোগীতামুলক টেন্ডার হলে সরকার লাভবান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, কক্সবাজার ডায়বেটিস পয়েন্ট থেকে ইনানী বীচ পর্যন্ত অন্তত ১২০০ কিটকিট রয়েছে। এতে সমপরিমান ছাতাও ব্যবহার হচ্ছে। একই সাথে ব্যবহার হচ্ছে বেডের কভার। ছাতার কাপড় ও বেডের কভারেই প্রচার হচ্ছে বড়-বড় কোম্পানীর বিজ্ঞাপন। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের জিইসি’র মোড়ের এড ফ্রেম নামের একটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার বিহীন গোপন চুক্তিতে সব কাজ নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানীকে বিক্রি করছে। এই বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির লোকজনই কিছু জানেন না। কমিটির সদস্য লুৎফুন্নাহার বাপ্পি জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে পরিস্কার কিছু জানে না। তবে ৪ বছরের একটি চুক্তির ভিত্তিতে ওই সংস্থাকে এটি দেওয়া হয়। এটি বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির লোকজন তেমন জানেন না। তবে টেন্ডার হয়না এটি নিশ্চিত। কমিটির সভায়ও বিষয়টি নিয়ে কোন কথা হয়নি। কেউ উত্থাপনও করেনি। আলোচনা হলে সবাই জানতে পারতেন। এর বাইরে আর কিছু জানা নেই। বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অপর একজন সিনিয়র সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রতি বছর কিটকটের মাধ্যমে প্রচারের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হলে প্রতি বছর অন্তত ২ কোটি টাকারও বেশী দরে টেন্ডার হত, এতে সরকার একটি বড় অংকের রাজস্ব পেত। বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতের মত বিজ্ঞাপন খাতে একটি মোটা অংকের রাজস্ব আসত। পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার মীর মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বিষয়টি চুক্তির মাধ্যমে একটি সংস্থাকে দেওয়া হয়। ওই সংস্থা বীচে ২০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়েছে এদের বেতন ওই সংস্থাই দেয়। এছাড়া প্রতি ৬ মাস পর ছাতার কাপড় ও বেডের কভার পরিবর্তন করে দেওয়ার শর্ত রয়েছে চুক্তিতে। এরা এ সবের বিনিময়ে সৈকতের কিটকিটের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বিভিন্ন কোম্পানীর। বিজ্ঞাপন টেন্ডার হয় না এটা সত্য। এ ছাড়া বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভায় কোন সময় আলোচনা হয়নি। সৈকতে ওই কোম্পানীর হয়ে জাহিদ নামের একজন এসব দেখাশোনা করেন। এর বেশী কিছু আমাদের কাছে জানা নেই। দীর্ঘদিন কক্সবাজার পর্যটন সেল’র দায়িত্ব পালন করা (বর্তমানে অন্য দায়িত্বে) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় জানিয়েছেন, কয়েকদিন থেকে আমিও ওই দায়িত্ব পালন করছি না। তবে গত দেড় বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে কোন সময় টেন্ডার হয়নি। যদি হয়ে থাকে আগেই হয়েছে।