ট্রেন যাত্রীকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার চুরি, স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার

কুমিল্লা থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে লাকসাম যাওয়ার পথে এক যাত্রীকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। তারা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর পূর্বপাড়ার মৃত বজলু মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (৫৩) ও তার স্ত্রী মালা বেগম।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭৩ হাজার টাকা মূল্যের ওই স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (৫ অক্টোবর) ছাতিপট্টি এলাকা থেকে স্বামী শফিকুল ইসলাম প্রকাশ শফিককে গ্রেফতার করা হয়। পরে লাকসাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে মালা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, গত ৩ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ৫০ বছর বয়সী মিনু রানী সাহা কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন। এ সময় তার ৬ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেন, যার মূল্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা। ৮ আনা ওজনের ২টি স্বর্ণের আংটি, যার মূল্য ৪৩ হাজার টাকা ও ৫০৫ টাকা খোয়া যায়।

পরে ট্রেনটি লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনে এসে দাঁড়ালে মিনু রানী সাহাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে লাকসাম রেলওয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করানো হয়। ৪ অক্টোবর তিনি সুস্থ হলে পুলিশ তার তথ্য মতে লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে মালা বেগম আটক করে। পরে তার থেকে একটি বাদামি রঙের ভ্যানিটি ব্যাগের ভেতরে মিনু রানী সাহার চুরি হওয়া ২টি স্বর্ণের আংটি, একটি লাল রঙের পার্সসহ ৫০৫ টাকা জব্দ করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেন, শফিকুল ইসলাম ওই যাত্রীকে ফুসলিয়ে চেতনানাশক খাবার খাইয়ে অচেতন করে স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদি হয়ে লাকসাম রেলওয়ে থানায় আটক আসামি মালা বেগম ও তার স্বামী পলাতক আসামি শফিকুল ইসলাম প্রকাশ শফিককে আসামি করে একটি মামলা করেন।

পরে ৫ অক্টোবর দুপুর দেড়টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আমজাদ আলী চৌধুরীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কুমিল্লা কোতোয়ালী থানাধীন ছাতিপট্টি এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি শফিকুল ইসলাম প্রকাশ শফিককে গ্রেফতার করেন। তার কাছ থেকে স্বর্ণের চেনটি উদ্ধার করা হয়।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টি থেকে সতর্ক হওয়ার জন্য রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ হতে প্রতিদিন স্টেশনে দাঁড়ানো ট্রেনে মাইকিং করা হচ্ছে। অপরিচতি কারো কাছ থেকে কিছু না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টি থেকে সতর্ক হওয়ার জন্য রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জনসচেতনামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।