ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আহ্বান কাদিরভের

ইউক্রেনে রুশ অধিকৃত অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভ। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর লিমান রাশিয়ার হাতছাড়া হওয়ার পর এ আহ্বান জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ এ মিত্র।
কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রুশ বাহিনীর পিছু হটার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সবশেষ ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণার এক দিন পরই (১ অক্টোবর) দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর লিমানের নিয়ন্ত্রণ হারায় রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলের সুরক্ষায় মস্কোকে ‘স্বল্প ক্ষমতা’র পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন রমজান কাদিরভ।

শনিবার (১ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে এক বার্তায় কাদিরভ বলেন, ‘আমার মতে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, দ্রুত সীমান্ত এলাকায় সামরিক আইন জারি করা এবং স্বল্প ক্ষমতার পরমাণু অস্ত্রও ব্যবহার করা উচিত।’ নিজেদের শক্ত ঘাঁটি থেকে এভাবে পিছু হটায় রাশিয়ার শীর্ষ কমান্ডারদের তীব্র সমালোচনাও করেন কাদিরভ।

রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেয়ার লক্ষ্যে গত সপ্তাহে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিজিয়া ও খেরসনে গণভোটের আয়োজন করা হয়। গণভোটের চার দিন পর শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ওই চার অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ ফেডারেশনের একীভূত করার ঘোষণা দেন পুতিন। এ সময় তিনি বলেন, ‘খেরসন, জাপোরিজিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের বাসিন্দারা আজীবনের জন্য আমাদের দেশের নাগরিক হয়ে গেল। আমরা যেকোনো মূল্যে আমাদের দেশ রক্ষা করব।’

পুতিনের ঘোষণার দিনই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন তারা। এরপরই লিমান শহর পুনরুদ্ধার করে ইউক্রেনীয় সেনারা। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও লিমান শহর থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শহরটি ইউক্রেনের সেনারা ঘিরে ফেলেছে। তাই ঝুঁকি থাকায় সেনাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

লিমান শহরে রাশিয়ার ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার সেনা ছিল। শহরটি ঘিরে ফেলার পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাহিনীর মুখপাত্র সেরি চেরেভাতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যত সেনা পাঠানো হয়েছিল, তত সেনা এখন আর লিমান শহরে নেই। অনেকে মারা গেছে, কেউ আহত হয়েছে, আবার কেউ পালিয়ে গেছে।

কৌশলগত কারণে লিমান শহরের গুরুত্ব অনেক। কারণ, দোনেৎস্ক অঞ্চলে সামরিকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পাঠানোর ক্ষেত্রে এই শহর ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া লুহানস্ক, দোনেৎস্ক ও খারকিভের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও এই শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।