অন্যের ঘরভাঙা সেই সুন্দরী ফিরছেন ইউক্রেনে!

ইউক্রেন সুন্দরী সোফিয়া কারকাদিম (২২) অবশেষে বৃটেন থেকে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের শুরুতে তিনি শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন বৃটেনে টনি গারনেট নামের এক ব্যক্তির সংসারে। টনি গারনেট দুই সন্তানের পিতা। তার ছিল সুন্দরী স্ত্রী লোরনা গারনেট (২২)। সোফিয়া তাদের সংসারে আশ্রয় পাওয়ার পর টনি গারনেটের সঙ্গে গোপনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর এক পর্যায়ে স্ত্রী, সন্তানদের ফেলে টনি গারনেট মজে যান সোফিয়ার প্রেমে। এক পর্যায়ে তিনি সোফিয়াকে সঙ্গী করে সংসার ছাড়েন। বেশ কয়েক মাস চলে তাদের প্রেমের ‘হানিমুন’ পিরিয়ড। আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে অবস্থান করেন দু’জনে। কিন্তু সেই প্রেম বুঝি আর টেকে না! শুক্রবার রাতে এক ঘণ্টা টনির সঙ্গে আলোচনা হয় সোফিয়ার।

টনিকে সাক্ষাৎ করার আহ্বান জানান সোফিয়া। কিন্তু টনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে সোফিয়া বুঝতে পেরেছেন তাকে ফেলে গেছেন বৃটিশ প্রেমিক টনি। তাই তিনি জিনিসপত্র প্যাকেট করছেন। আর বৃটেন নয়। ফিরে যাবেন ইউক্রেনে। এ নিয়ে বিস্তৃত এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ডেইলি মেইল।
সোফিয়া কারকাদিম ইউক্রেনের আইটি ম্যানেজার। টনি গারনেটের সঙ্গে তিনি আলাদা বাসা নিয়ে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। সোফিয়াকে সারাজীবন সঙ্গী করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তাতে বিভোর হয়ে যান সোফিয়া। দিনকাল ভালোই কাটছিল তাদের। কিন্তু গত সপ্তাহের ছুটির সময়ে ঘটে যায় এক অঘটন। ওই সময় সোফিয়া ছিলেন মদ্যপ। তিনি রান্নাঘরের একটি ছুরি হাতে টনির দিকে ছুটে যান। এরপরই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তখন থেকেই সাবেক এই পার্টনার প্রথম প্রকাশ্যে কথা বলতে শুরু করেন। টনি ঘোষণা করে দেন দু’জনের মধ্যকার সম্পর্কের ইতি ঘটাচ্ছেন তিনি। তা নিয়েই শুক্রবার রাতে দু’জনের এক ঘণ্টা কথা হয়। এতে সোফিয়াকে টনি জানিয়ে দেন, তাদের আর যুগল হিসেবে একসঙ্গে থাকার সুযোগ নেই।
অথচ শরণার্থী হিসেবে চার মাস আগে বৃটেনে ছুটে গিয়েছিলেন সোফিয়া। তার কোনো থাকার জায়গা ছিল না। দয়া দেখিয়ে তাকে আশ্রয় দেন টনি এবং তার স্ত্রী লোরনা। এর ১০ দিনের মাথায়ই উল্টোপাল্টা হয়ে যায় সব। প্রেমে জড়িয়ে পড়েন টনি এবং সোফিয়া। তারা ওই গৃহত্যাগ করেন। কিন্তু এখন সোফিয়ার মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়েছে। তিনি টনির এমন চেহারায় ক্ষুব্ধ। ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন, আমার মা-ও চাইছেন আমি যেন ইউক্রেনে ফিরে যাই। টনির প্রতি সোফিয়ার মা ক্যাটেরিনা বলেছেন, ভালোবাসার ক্ষেত্রে সবার নিজস্ব পছন্দ আছে। প্রথমেই তোমাদের সম্পর্কের বিষয়ে আমরা খুশি ছিলাম না। কিন্তু আমার মেয়ে বলেছেÑ সে তোমাকে ভালোবাসে। এটা গুরুতর এক প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু সেই সম্পর্ক এখন শেষ হয়ে গেছে। আমরা চাই, সোফিয়া এখন দেশে ফিরে আসুক।
উল্লেখ্য, সোফিয়াকে দু’বার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে সতর্ক করে দিয়েছে পুলিশ। বলেছে, তিনি যেন আর তার সাবেক প্রেমিক টনির দিকে অগ্রসর না হন বা তার সঙ্গে যোগাযোগ না করেন। কিন্তু অস্থায়ী আবাসে সোফিয়া কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন একথা শুনতে পেয়ে তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন টনি। ততক্ষণে বৃটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইউক্রেনের কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন, সোফিয়ার গন্তব্য কী হতে যাচ্ছে।
বৃটেনের ব্রাডফোর্ডের যুবক টনি। বলেছেন, আমি তো হৃদয়হীন নই। তার জন্য আমার কষ্ট হয়। কিন্তু সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। এখন এটা একেবারে শেষ হয়ে গেছে। তার মর্মবেদনা সরে গেলে আমরা বন্ধু হিসেবে থাকতে পারবো বলে আশা করি। শুক্রবার রাতে তার সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের আর একসঙ্গে থাকা হবে না। অন্যদিকে সোফিয়া বলেন, আমাকে যখন এসব কথা বলা হচ্ছিল- তখন আমার গণ্ড বেয়ে অশ্রু ঝরছিল। তবে খুশি এ জন্য যে, টনি আমার সঙ্গে আবার কথা বলছে। সে আমাকে একটি মেসেজ পাঠিয়েছে। শুধু এর ওপর ভিত্তি করে আমি সম্পর্ক কাটছাঁট করতে পারি না। আমার জন্য এটা খুব কঠিন সময়। তাকে খুব ভালোবাসি আমি। এত সহজে আমি চলে যেতে পারবো না। কোনো বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবার ছাড়া বৃটেনে আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। তাকে বলেছি, আর কখনো মদ পান করবো না। আমরা সুখে একসঙ্গে থাকতে চাই। সে বলেছে, এখন আর সেই সুযোগ নেই। সে অস্বীকার করেছে। আমি জানি নাÑ এরপর কি করবো। হয়তো ইউক্রেনে ফিরে যেতে হবে। কারণ, এভাবে এখানে আমি বাঁচতে পারবো না। আমার পরিবার চায় আমি যেন ফিরে যাই। জানি না আমার ভবিষ্যৎ কী হবে। আমার দেশে যুদ্ধ চলছে। সেখানে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ইংল্যান্ডকে এবং এর মানুষকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। এটা একটা নিরাপদ জায়গা। টনির সঙ্গে যখন থাকি, তখন বেশি ভালো লাগে।